মাহদী হাসান মুন, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি:
বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় কিশোর অপরাধীদের ছুরিকাঘাতে রশিদুল ইসলাম (৩২) নামে এক সেচ্ছাসেবী কর্মী খুন হয়েছেন। এসময় তার ভগ্নিপতি বছির ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরের দিকে শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় টাউন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত রশিদুল শহরের রহমান নগর এলাকার মৃত জাহেদুল ইসলাম লালুর ছেলে। তিনি শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় জব্বার ক্লাব মোড়ে ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী ছিলেন। এছাড়াও তিনি একাধিক সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন।
জানা গেছে, রশিদুলের ভাগ্নে শান্ত (১২) টাউন স্কুল মাঠে খেলাধুলা করছিল। এসময় কয়েকজন কিশোর তাকে মারধর করে। ঘটনার সময় রশিদুল রিকশাযোগে টাউন স্কুলের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তার ভাগ্নেকে মারধর করার দৃশ্য দেখে রিক্সা থেকে নেমে মারধরকারী কিশোরদের সাথে কথা বলছিলেন। এসময় তার ভগ্নিপতি বছির ছেলেকে মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। সেখানে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায় দুই কিশোর রশিদুলের পিঠে এবং বছিরের হাতে ও উরুতে ছুরিকাঘাত করে। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে দুইজনকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল পৌনে চারটায় রশিদুল মারা যান।
নিহত রশিদুল সমাজ সেবক হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিত ছিলেন। মানুষের জীবন বাঁচাতে তিনি অনলাইনে ব্লাড ব্যাংকের মধ্যে রক্ত সংগ্রহ করে দিতেন। এলাকায় পুরুষ কেউ মারা গেলে মরদেহ গোসল করানোর জন্য ডাক পরতো রশিদুলের। এছাড়াও করোনাকালে তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে করোনায় কেউ মারা গেলে মরদেহ দাফন করার দায়িত্ব নিতেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রশিদুল করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে নিজের মটর সাইকেল বিক্রি করে অসহায় মানুষের খাদ্য সহায়তা করেছেন।
বগুড়া পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুল হক আরিফ দৈনিক আলোর পথ কে বলেন, রশিদুলের ভাগ্নেকে মারধরের প্রতিবাদ করার একই এলাকার সামাইন ও সিয়াম নামের দুই কিশোর রশিদুল ও তার, ভগ্নিপতি বছিরকে ছুরিকাঘাত করে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর অপারেশন থিয়েটারে রশিদুল মারা যান।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী দৈনিক আলোর পথ কে বলেন, ঘটনার পর পরই পুলিশের একাধিক টিম জড়িতদের গ্রেফতার করতে মাঠে নেমেছে।
No comments:
Post a Comment