মোঃ সাজেদুল ইসলাম, মাগুরা প্রতিনিধিঃ মাগুরার শ্রীপুরে পদ্মার শাখা গড়াই নদীতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে নদী তীরবর্তী পরিবারের মানুষরা। নদীর ভাঙনে ইতোমধ্যে কাদিরপাড়া ইউনিয়নের কমলাপুর ও মাটিকাটা গ্রামের ১১টি বাড়ি ও বেশ কিছু ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। অন্যত্র চলে গেছে অর্ধশত পরিবার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হঠাৎ করে গড়াই নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নদী তীরের ভূমি ধসে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। এছাড়া তীরবর্তী এলাকায় বড় বড় ফাটল দেখা দেয়ায় স্থানীয়রা আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন।
সম্মিলিত পঞ্চগ্রাম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান সরকার বলেন, ‘আমার সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে একটি দোতলা বাড়ি করেছি। যেকোনো সময় আমার বাড়িটি নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে, তাই দ্রুত সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিকট অনুরোধ করেছি।’
কমলাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুদর্শন বালা জানান, নদী তীরের শতাধিক পরিবার আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে অনেকেই বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
ইতোমধ্যে মাটিকাটা গ্রামের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন, সুশান্ত বালা, অমল বালা, সুবর্ণ সরকার, মনীন্দ্রনাথ, অঞ্জলী রানী সরকারসহ বেশ কয়েকজনের পরিবার নদী ভাঙনের ফলে গৃহহারা হয়েছেন।
ভাঙনের শিকার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমার কোনো সম্পদ নেই, শুধু ঐ ভিটাটুকুই সম্বল ছিল। এখন তাও নেই, আমি এখন নিঃস্ব।’
এ বিষয়ে কাদিরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ লিয়াকত আলি বিশ্বাস জানান, তিনি নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য, শ্রীপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, মাগুরা জেলা প্রশাসন ও মাগুরা পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করেছেন।
মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান সুজন এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গড়াই নদীর ১০টি পয়েন্ট এবং মহম্মদপুর উপজেলার মধুমতি নদীর ২০ পয়েন্ট ভাঙন মেরামতের কাজ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাবনা আকারে পাঠিয়েছি। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
No comments:
Post a Comment