গাজীপুরে টিউশনি করে খরচ বহন করা শিক্ষার্থীরা হিমসিম খাচ্ছে মেস ভাড়া দিতে - Alorpoth24.com | সত্য প্রকাশে কলম চলবেই

শিরোনাম

08 June, 2020

গাজীপুরে টিউশনি করে খরচ বহন করা শিক্ষার্থীরা হিমসিম খাচ্ছে মেস ভাড়া দিতে


ডেস্ক রিপোর্টঃ 
ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আলামিন ইসলাম (ছদ্দনাম । কোনাবাড়ী আমবাগ এলাকার একটি মেসে থাকেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। টিউশনি ও কিন্ডার গার্টেন এ চাকরি  করে পড়াশোনার খরচ ও মেস ভাড়ার ব্যয় নির্বাহ করেন তিনি। কিন্তু মহামারীর সময় টিউশনি বন্ধ। ওদিকে মেস মালিক ভাড়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছে। এমন সঙ্কট শুধু আলামিন এর একার নয়। ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ ও কোনাবাড়ী ডিগ্রী কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের উপায়হীনতার কথা জানিয়েছেন। এসময় কলেজ কর্তৃপক্ষকে এমন নিরূপায় শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো ১৮ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় গাজীপুর এর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরপর অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাড়িতে চলে গেলেও বিশেষ করে যাদের টিউশনি বা খণ্ডকালীন চাকরি আছে বা সামনে পরীক্ষা তারা রয়ে যান। কিন্তু এর মধ্যে ২৬ মার্চ থেকে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের পরিবহনও। ফলে এই শিক্ষার্থীরা আটকা পড়ে যান। এখন উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় থাকা খাওয়ার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

ইতোমধ্যে " মানবেতর জীবনযাপন করছে কিন্ডার গার্টেন এর শিক্ষকরা " শিরোনামে খবর প্রকাশ হলে কোনাবাড়ীতে শিক্ষকদের পাশে এগিয়ে আসেনি কেউই।          

কলেজ কর্তৃপক্ষ  সূত্রে জানা যায়,  কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় ৬০-৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী চান্দনা,  কোনাবাড়ী এবং কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মেস বা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। তবে কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘ সময় মেসে না থাকলেও ভাড়া ঠিকই দিতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এসব কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বড় অংশই নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের অনেকেই টিউশনি, খণ্ডকালীন চাকরি করে পড়াশোনা ও থাকা-খাওয়ার ব্যয় নির্বাহ করেন।

এই অবস্থায় মেস ভাড়া নিয়ে এমন বিপদে পড়া ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক শিক্ষার্থী সাইফুল  ইসলাম (ছদ্মনাম) বলেন, আমরা একটি ইউনিট ভাড়া নিয়ে থাকি। ওই ইউনিট এর দায়িত্ব আমি পালন করি।   মেসের বাকি সদস্য টাকা না পাঠানোয় বাড়িওয়ালা আমাকেই চাপ দিচ্ছে। তাই আমি নিরুপায় হয়ে পরেছি। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে উপার্জন বন্ধ। গত মাসের মেস ভাড়া দিতে পারেননি অনেকেই।

তিনি আরো বলেন, আমাদের অধিকাংশই টিউশনি বা খণ্ডকালীন চাকরি করে নিজের খরচ নিজেরাই নির্বাহ করে থাকি। দেশের এই অবস্থায় সব কিছু বন্ধ থাকায় বাড়ি ভাড়া এখন আমাদের জন্য মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উর্পাজন না থাকায় শিক্ষার্থীদের এমন দুর্ভোগের কথা জানিয়ে গাজীপুর মডেল কলেজের শিক্ষক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, এই অবস্থায় অনেকের পরিবারের পক্ষ থেকে মেসের ভাড়া দেয়া কঠিন। আর যারা টিউশনি করে চলতো এখন করোনা পরিস্থিতির কারণে বাড়িতে বসে থাকতে হচ্ছে। তারা কীভাবে মেস ভাড়া দেবে? এক্ষেত্রে সরকারি কলেজ  প্রশাসন তাদের সহযোগিতা পারে বলে আমি মনে করি।  

এসব শিক্ষার্থীর জন্য কিছু করা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ এর বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অসীম বিভাকর বলেন, "কলেজ প্রশাসনের পক্ষ সহযোগিতা করার সুযোগ আছে বলে আমার জানা নেই, তবে জেলা প্রশাসন এবং সিটি মেয়র এগিয়ে আসলে শিক্ষার্থীরা এই বাড়তি চাপ থেকে মুক্তি পেত "।        

এ বিষয়ে এসব শিক্ষার্থীরা সিটি মেয়র ও জেলা প্রশাসন কে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।   

No comments:

Post a Comment